মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই রায় প্রদান করেন। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যবিশিষ্ট আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে এটাই প্রথম ঘটনা, যেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো অভিযুক্ত আপিল বিভাগের রায়ে মুক্তি পেলেন। আইনজীবীদের মতে, এই রায়ের ফলে আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
তার আইনজীবী শিশির মনির বলেন, “এই রায়ের জন্য সবার আগে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাই। তাকে সব অভিযোগ থেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ হিসেবে খালাস দেওয়া হয়েছে। এটি ছিল এক ধরনের বিচারের মুখোশে অন্যায়।” তিনি আরও বলেন, “এই রায়ের মাধ্যমে সত্যের জয় হয়েছে এবং মিথ্যার পরাজয় ঘটেছে। এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে যে নির্যাতন হয়েছিল, তা ইতিহাসে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত থাকবে।” উল্লেখযোগ্য যে, মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি তিনি আপিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখে।
২০২০ সালের ১৫ মার্চ এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ রূপ প্রকাশিত হয়। এরপর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়ে ওই বছরের ১৯ জুলাই আজহারুল ইসলাম একটি রিভিউ আবেদন করেন। চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ রিভিউ শুনানি শেষে পুনরায় আপিল শুনানির অনুমতি দেয়। এটিই ছিল প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা, যেখানে রিভিউ পর্যায় পেরিয়ে পুনরায় আপিল শুনানি হয়েছে। এটি উল্লেখযোগ্য যে, ২০১২ সালের ২২ আগস্ট রাজধানীর মগবাজার এলাকার বাসা থেকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আজহারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় থেকেই তিনি কারাবন্দি ছিলেন।