ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার (৬ জুলাই) ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন, যেখানে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এই সাক্ষাতের মূল আলোচনার বিষয় হলো গাজায় চলমান সংঘর্ষ এবং সেই প্রসঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি। কয়েকদিন ধরেই ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন যে গাজায় শীঘ্রই যুদ্ধবিরতি হতে পারে এবং এ ব্যাপারে আলোচনা হবে। তবে নেতানিয়াহু যাত্রার আগে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন যে, তারা কখনোই এমন কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হবেন না যেখানে গাজায় হামাস ক্ষমতায় থাকবে বা তাদের অস্তিত্ব বজায় থাকবে। নেতানিয়াহু বলেন, "আমরা কখনোই এমন পরিস্থিতি মেনে নেব না যা অপহরণকারী ও হত্যাকারীদের উৎসাহিত করে।" তাঁর ভাষায়, গাজায় হামাসের সামরিক শক্তি সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে হবে এবং তারা আর গাজায় অবস্থান করতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, ইসরাইলের প্রধান লক্ষ্য হল গাজায় দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা এবং শান্তি বজায় রাখা, যা শুধুমাত্র তখনই সম্ভব যখন হামাস সম্পূর্ণরূপে শক্তিহীন হবে।
তাঁর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, ইসরাইলের জন্য যুদ্ধবিরতি মানেই হামাসের অস্তিত্ব অক্ষুণ্ণ রাখা নয়, বরং একটি শক্তিশালী ও স্থায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এর পাশাপাশি, নেতানিয়াহু উল্লেখ করেন যে ইসরাইল ইতোমধ্যে এমন কয়েকটি দেশের সঙ্গে শান্তিচুক্তির পথে এগুচ্ছে, যাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনার কথা আগে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। সম্প্রতি সিরিয়া, লেবানন এবং সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে নানা আলোচনা হয়েছে। তবে সৌদি আরব ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছে যে তাদের প্রথম লক্ষ্য এখন যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিশ্চিত করা এবং তারপর কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে চিন্তা করবে। ইসরাইল-ফিলিস্তিনি সংঘাত বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘতম এবং জটিল সংঘাতের একটি। গাজা অঞ্চলে হামাসের নিয়ন্ত্রণ ও ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মধ্যকার এই সংঘর্ষ বহু বছর ধরেই চলমান। নেতানিয়াহুর বক্তব্য এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে আলোচনার মাধ্যমে আশা করা হচ্ছে, যুদ্ধবিরতি হলেও তা হবে দৃঢ় এবং স্থায়ী। তবে নেতানিয়াহুর অবস্থান স্পষ্ট যে, যুদ্ধবিরতি কখনই হামাসকে ক্ষমতায় রেখে দেওয়া হবে না এবং এই ধরনের চুক্তি ইসরাইল কখনোই মেনে নেবে না।
এখনও চলমান সংঘর্ষে হাজারো মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ী শান্তির জন্য চাপ প্রদান করছে। ভবিষ্যতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে নেতানিয়াহুর আলোচনার ফলাফল এই সংঘাতের পরবর্তী ধাপ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।