বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় ওজনে কম এবং অসুস্থ বাছুর বিতরণের অভিযোগে ৬৫টি বকনা বাছুর ফেরত পাঠিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক রিফাত আরা মৌরি। মঙ্গলবার (২০ মে) উপজেলা পরিষদ চত্বরে বাছুর বিতরণের সময় এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশীয় প্রজাতির মাছ ও শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়, গৌরনদী উপজেলা মৎস্য অফিস ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় ৬৫ জন মৎস্যজীবীর মধ্যে বকনা বাছুর বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। জেলেদের বিকল্প জীবিকানির্ভরতা নিশ্চিত করতে এবং দেশীয় মাছের প্রজনন রক্ষার্থে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে মৎস্য অধিদপ্তর। এই প্রকল্পের আওতায় সিমেন্স এলাইন্স বিডি লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, যার মালিক ধীরেন্দ্র নাথ, বাছুর সরবরাহের দায়িত্ব পান। জেলেরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরেই ছাগল ও বাছুর বিতরণে অনিয়ম চলমান রয়েছে। ওজনে কম এবং রোগাক্রান্ত পশু সরবরাহ করা হয়, আর প্রতিবাদ করলে হয়রানির শিকার হতে হয়। তারা আরও জানান, এর আগেও একবার একই রকম কম ওজনের বাছুর বিতরণের চেষ্টা হয়েছিল। তখন তৎকালীন ইউএনও আবু আবদুল্লাহ খান সেই বাছুরগুলো ফেরত পাঠিয়েছিলেন। বাছুর বিতরণের আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ওজন নিশ্চিত করতে বলা হলে এমন ঘটনা হয়তো এড়ানো যেত।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ দেবনাথ বলেন, ৭০ কেজি ওজনের বাছুর দেওয়ার কথা থাকলেও সরবরাহকৃত বাছুরগুলোর ওজন ছিল ৫০ থেকে ৫৫ কেজি এবং বেশিরভাগই অসুস্থ। ইউএনও বিষয়টি নজরে এনে বিতরণ বন্ধ করে বাছুর ফেরত পাঠান।ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দিনাজপুর থেকে ট্রাকযোগে দীর্ঘপথ অতিক্রমের কারণে বাছুরের ওজন কিছুটা কমে গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আরা মৌরি বলেন, বাছুরগুলোর ওজন নির্ধারিত মান অনুযায়ী না হওয়ায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সিডিউল অনুযায়ী সঠিক ওজনের বাছুর সরবরাহ করতে বলা হয়েছে, অন্যথায় সেগুলো গ্রহণযোগ্য হবে না। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারিতেও একই প্রকল্পের আওতায় ফোকাস ট্রেডিং নামের আরেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একই ধরনের অভিযোগের মুখে পড়ে। সে সময়ও ইউএনও মো. আবু আবদুল্লাহ খান রোগাক্রান্ত ও কম ওজনের বাছুর ফেরত পাঠান। পরবর্তীতে নিয়ম অনুযায়ী বাছুর সরবরাহের পর সেগুলো বিতরণ করা হয়।