ইসরাইলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী। এই আকস্মিক হামলার ঘটনায় ইসরাইলজুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় লাখ লাখ মানুষকে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। ইসরাইলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শুক্রবার অধিকৃত ভূখণ্ডের বিভিন্ন স্থানে হামলার খবর পাওয়া গেছে। আল জাজিরা আরবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি গণমাধ্যম ইয়েমেন থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রের খবর প্রকাশ করেছে এবং দাবি করেছে যে এই ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি শাসকগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের দিকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল। এমন হামলার পরপরই দেশটির কেন্দ্রস্থলের বিস্তীর্ণ এলাকায় সতর্ক সাইরেন বাজতে শুরু করে। ইসরাইলি বাসিন্দাদের অনেকেই আতঙ্কে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটে যান। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, নিরাপত্তার খোঁজে দৌড়াদৌড়ির সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে ইসরাইলের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর তেল আবিবের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ধরনের বিমান চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেওয়া হয়। ইসরাইলি টেলিভিশন চ্যানেল ১২ এ খবর নিশ্চিত করেছে। তাদের মতে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলা নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তবে সামরিক সূত্রের দাবি, ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি বেশ শক্তিশালী ছিল এবং এটি প্রতিরোধ করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যদিও স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কয়েকটি এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনো পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, ইসরাইলের চলমান সামরিক অভিযানের প্রতিশোধ হিসেবেই এ হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে।
হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের ছবি ও ভিডিও প্রকাশিত হচ্ছে। দেখা গেছে, সাইরেন বাজতেই শিশু ও নারী-পুরুষ দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, আশ্রয়কেন্দ্রের ভিড় ও বিশৃঙ্খলার কারণে নিরাপদে প্রবেশ করতে গিয়ে তারা শারীরিকভাবে আহত হয়েছেন। ইসরাইলের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, ইয়েমেন থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া একটি বড় ধরনের বার্তা। এটি শুধু সামরিক চাপ নয়, বরং কূটনৈতিকভাবেও ইসরাইলের জন্য একটি নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে। কারণ, দূরবর্তী একটি দেশ থেকেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো সম্ভব হচ্ছে-যা দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবশেষে, ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো বলছে, হামলার ঘটনাটি দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও বিমান চলাচলে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। একই সঙ্গে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় হাজার হাজার মানুষ রাতভর আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করতে বাধ্য হয়েছেন।